শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৮ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:বরিশালের উজিরপুরে আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী ২২টি কেন্দ্র দখলে করে জালভোটের পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বিরা। এছাড়া অন্যান্য সকল কেন্দ্রে বাইরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ভাড়াটে লোকজন এনে পরিবেশ অশান্ত করার পায়রাতা চলছে বলে আশংকা নৌকার প্রতিদ্ব¦ন্ধি প্রার্থীদের।
তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু এই অভিযোগ অস্বীকার করে প্রতিদ্বন্ধিদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পাল্টা অভিযোগ করেছেন। এদিকে উপজেলা নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম সহ্য করা হবে না, বরং কেউ নিয়মের ব্যতয় ঘটালে সংশ্লিস্টদের জেলে ঢোকানোর হুশিয়ারী দিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তৃতীয় ধাপে আগামী ২৪ মার্চ বরিশালের ৯টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান এবং পুরুষ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হওয়ায় তাদের ইতিমধ্যে নির্বাচিত ঘোষনা করেছে কমিশন। এছাড়া বরিশাল সদর, বাকেরগঞ্জ, মুলাদী ও বানারীপাড়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা চেয়ারম্যান হয়েছেন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায়। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছে বাবুগঞ্জে।
২৪ মার্চের নির্বাচনে উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৩জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন, হিজলায় চেয়ারম্যান পদে ৩জন, পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন, বাবুগঞ্জে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫জন, বাকেরগঞ্জে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন, মুলাদীতে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩জন এবং সদর উপজেলায় পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ২জন প্রার্থী।
তবে এর মধ্যে নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়েছে উজিরপুর উপজেলায়। সেখানে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চুর (নৌকা) পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিদায়ী উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল (কাপ-পিরিচ) এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাসদ নেতা আবুল কালাম আজাদ বাদল (আনারস)। এখানে প্রতিদ্বন্ধি প্রত্যেক প্রার্থী তাদের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও আওয়ামী লীগ প্রার্থী মজিদ সিকদারের বিজয় সু-নিশ্চিত করতে স্থানীয় সাবেক এক এমপি কৌশল অবলম্বন করেছে বলে অভিযোগ প্রতিদ্বন্দ্বিদের।
তারা ২২টি কেন্দ্রের তালিকা করে প্রতিটি কেন্দ্রে জালভোটৎসব করার জন্য স্থানীয় একাধিক নেতাকে দায়িত্ব বন্টন করে দেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থী হাফিজুর রহমান ইকবাল বলেন, বাইরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ভাড়াটে সন্ত্রাসী জড়ো করা হয়েছে। তাদের দিয়ে ভোটের দিন সকালেই কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতীর পায়তারা চলছে। তিনি সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানান।
স্বতন্ত্র প্রার্থী জাসদ নেতা আবুল কালাম আজাদ বাদল একই দাবি করে বলেছেন নির্বাচন বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে। এদিকে নৌকার প্রার্থী আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু ভোট ডাকাতীর পায়তারা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা তাদের পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পারবে বলে আশা করেন তিনি।
জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, কেন্দ্র্র দখলের মতো কোন ঘটনা ঘটতে দেয়া হবে না। এ জন্য যথেষ্ট সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনী নির্বাচনী মাঠে তৎপর থাকবে। আর উজিরপুরের নির্বাচনে বিশেষ দৃষ্টি রাখা হবে। জেলা প্রশাসক আশ্বস্ত করেন ভোটারদের নিরাপত্তায় যা কিছু করণীয় সব কিছু করছে প্রশাসন। ভোট কেন্দ্র দখল করে জাল ভোট দেওয়ার চেস্টা হলে সংশ্লিস্টদের জেলে ঢোকানোর হুশিয়ারী দেন জেলা প্রশাসক।
Leave a Reply